চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে চাঁদা না পেয়ে এস এ গ্রূপের কারখানায় তালা দিয়েছে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী গ্রূপ। তালাবদ্ধ কারখানায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রচুর পরিমাণে কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্য। নির্দিষ্ট সময়ে দেশ থেকে প্রথমবার পেপার সিঙ্গাপুরে শিপমেন্ট করাতে না পারায় বিশাল অঙ্কের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে প্রতিষ্টানটি। রাস্তা বন্ধ ও কারখানায় তালা লাগিয়ে দেওয়ায় কারণে উৎপাদনতো দুরের কথা বেকার হয়েছে হাজার হাজার শ্রমিক ও কর্মচারী।
তাছাড়া, কারখানার ভিতরে যেতে পারছেন না এস এ গ্রূপের শ্রমিক-কর্মচারীরাও। বেকার দিন কাটাতে হচ্ছে কারখানার প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক। যেখানে সরকার শিল্প কারখানা সৃষ্টি করার জন্য উৎসাহিত করে যাচ্ছে সেখানে একদল সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সরকারের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করার জন্য আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে এস এ গ্রূপের মতো ৩৫ বছরের পুরোনো স্বনামধন্য শিল্প প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিচ্ছে।
জানা যায়, এস এ গ্রূপ তাদের নিজস্ব রাস্তা দিয়ে বিগত ৩০ বছর যাবত আসা যাওয়া করে যাচ্ছে। হঠাৎ করে তাদের রয়েছে নিজস্ব বৈধ মালিকানা দলিল। কিন্তু হঠাৎ করে স্থানীয় প্রভাবশালী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সাব্বির মেম্বার তার দলবল নিয়ে বিগত ১৫ ফেব্রুয়ারী রাত আনুমানিক ১১.৩৫ মিনিটের দিকে মেম্বার ও তার একদল সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে রাস্তাটি বন্ধ করে দেয় তারা এবং শিল্পকারখানার মালামাল ও পরিবহন আসা যাওয়ার বিঘ্ন সৃষ্টি করে এক পর্যায়ে এস এ গ্রূপের মূল গেইটে তালা লাগিয়ে ও গেইটের পেছনে ড্রাম দিয়ে গেইটটি বন্ধ করে দেয়।
এতে একরকমের অসহায় ও নিঃস্ব হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। জানা যায় , স্থানীয় সন্ত্রাসী সাব্বির মেম্বার প্রশাসনের দৃষ্টির আড়াল করার জন্য ওই রাস্তাটির পার্শবর্তী পাহাড়টি কাটার সুবিধার্তে রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। এতে বর্তমানে সে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ। তার রয়েছে একদল সন্ত্রাসী বাহিনী। স্থানীয়রা সাব্বির মেম্বারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পায়। নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, এলাকায় আতঙ্কের নাম সাব্বির আহম্মদ চৌধুরী। ভাটিয়ারিতে দীর্ঘদিন ধরে অপরাধের রাজত্ব কায়েম করেছে তার বাহিনী।
ভূমি দখল থেকে শুরু করে পাহাড় কাটা, চাঁদাবাজি এমন কোনো অপরাধ নেই যা করে না সাব্বিরের লোকজন। এতকিছুর পরও কেউ মুখ খোলার সাহস করে না। কারণ জলে বাস করে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করবে কে?
এ ব্যাপারে এস এ গ্রূপের মহাব্যবস্থাপক দিদারুল আলম বলেন, মুসকান ও গোয়ালীনি এস এ গ্রূপের ৩০ বছরের একটি স্বনামধন্য ভোগ্যপণ্য। আমরা সরকারকে ভ্যাট টেক্স দিয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করি। আমাদের মাধ্যমেই দেশের জিডিপি বৃদ্ধি পায়। যেই রাস্তাটা আমাদেরকে ব্যবহার করতে বাধা দিচ্ছে সেটি আমাদের বৈধ ও মালিকানাধীন রাস্তা। বৈধ রাস্তা হয়েও আমরা যদি চলাচল করতে না পারি ও স্থানীয় নাম সর্বস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী তৎপরতায় যদি আমাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। একদিকে যেমন আমরা ক্ষতিগ্রস্থ অন্যদিকে সরকারের জিডিপি হারাবে। এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের মাধ্যমে স্থানীয় সন্ত্রাসীর হাত থেকে মুক্তি চাই। তাছাড়া, আমরা বিষয়টি শিল্প পুলিশকে জানিয়েছি।
শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার ( প্রশাসন ) মোঃ জসিম উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি একজন তদন্ত কর্মকর্তা এবং লোকাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছিলাম। আসলে রাস্তাটির বৈধ কাগজপত্র এস এ গ্রূপের রয়েছে। আমরা এস এ গ্রূপের প্রতিনিধি এবং সাব্বির মেম্বারকে সময় দিয়েছি আমাদের সাথে বসে রাস্তার বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য।
ভোগ্যপণ্য নষ্ট , দেরিতে শিপম্যান্ট ও এস এ গ্রূপের রাস্তাটির বৈধ মালিকানার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সাব্বির মেম্বার বলেন, এস এ গ্রূপের জন্য আমরা একটা নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তা তৈরী করেছি। ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করার জন্য এস এস গ্রæপকে অনেকবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা কোন কর্ণপাত না করার কারণে আমরা তালা দিয়েছি। ওরা চাইলে আমাদের বানানো রাস্তাটি ব্যবহার করতে পারে।