1. admin@nagoriknewsbd.com : admin :
  2. hossainkamrul92@gmail.com : Kamrul Hossain : Kamrul Hossain
মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
মাস্টারদা সৃর্য সেন’র জন্মদিনে পুস্পিত শ্রদ্ধাঞ্জলি চকরিয়ায় দুই টিসিবির ডিলার নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত – কর্মকর্তাদের সন্তোষ প্রকাশ নিয়াজ মোর্শেদ এলিট ব্লাড ডোনার্স ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত এসএসসি ৮৭ ব্যাচের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত জ্যোতি-সৌরভ থেকে বিএসসির আয় ১৫৩৬ কোটি টাকা তীব্র পানি সংকট—চট্টগ্রাম ওয়াসা ঘেরাও করলেন ভুক্তভোগীরা রিহ্যাব আয়োজিত ইফতার মাহফিলে অতিথিবৃন্দ বৃহত্তর ময়মনসিংহ সিএন্ডএফ কর্মকর্তা কর্মচারী সমিতি ২০১৮ চট্টগ্রাম এর ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ: এক জীবন্ত অনুপ্রেরণা ও যুগান্তকারী বার্তা ৭০০ প্রাণের নিঃশ্বাস থামিয়ে রেস্টুরেন্টে বিক্রির প্রস্তুতি, নির্মম সেই শিকারিরা আটক!
শিরোনাম :
মাস্টারদা সৃর্য সেন’র জন্মদিনে পুস্পিত শ্রদ্ধাঞ্জলি চকরিয়ায় দুই টিসিবির ডিলার নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত – কর্মকর্তাদের সন্তোষ প্রকাশ নিয়াজ মোর্শেদ এলিট ব্লাড ডোনার্স ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত এসএসসি ৮৭ ব্যাচের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত জ্যোতি-সৌরভ থেকে বিএসসির আয় ১৫৩৬ কোটি টাকা তীব্র পানি সংকট—চট্টগ্রাম ওয়াসা ঘেরাও করলেন ভুক্তভোগীরা রিহ্যাব আয়োজিত ইফতার মাহফিলে অতিথিবৃন্দ বৃহত্তর ময়মনসিংহ সিএন্ডএফ কর্মকর্তা কর্মচারী সমিতি ২০১৮ চট্টগ্রাম এর ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ: এক জীবন্ত অনুপ্রেরণা ও যুগান্তকারী বার্তা ৭০০ প্রাণের নিঃশ্বাস থামিয়ে রেস্টুরেন্টে বিক্রির প্রস্তুতি, নির্মম সেই শিকারিরা আটক!

সভ্যেরা গড়ে, অসভ্যেরা ভাঙ্গে

  • শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

লেখক- ড. বরসম্বোধি ভিক্ষু, কোলকাতা

একবার এক সন্ত-সাধু খরস্রোতা নদীর ধারে এক বৃক্ষমূলে তপস্যারত ছিলেন। তিনি হঠাৎ দেখতে পেলেন এক পিঁপড়া গাছে উঠতে গিয়ে পিছলে জলে পড়ে গেল। পিঁপড়া চেষ্টা করেও জল হতে উঠতে পারছেনা। তা দেখে সাধুর মনে করুণা উৎপন্ন হল। তিনি চিন্তা করলেন পিঁপড়াটি জলের স্রোতে ভেসে গিয়ে মারা যাবে। সাধু তাঁর সাধুতা বশত: পিঁপড়ার প্রাণ বাঁচাতে উদ্যোগী হলেন এবং তাকে জল হতে নিয়ে গাছে তুলে দিলেন। জল হতে তোলার সময় পিঁপড়া সাধুর হাতে কামড় দিল। সাধু হাঁস্যে করুণা দৃষ্টিতে দেখলেন।

এরপর গাছের উপরের দিকে উঠতে চেষ্টা করলে পিঁপড়াটি আবার জলে পড়ে গেল। সাধুর কোমল হৃদয়ে করুণার স্রোত প্রবাহিত হল। তাই আবারো পিঁপড়াটিকে জল হতে তুলে গাছে উঠিয়ে দেওয়ার সময়ও সাধুর হাতে পিঁপড়া পুণরায় কামড় দিল। সাধু তাতেও স্মিত হেঁসে আনন্দ প্রকাশ করলেন যে, তিনি পিঁপড়ার প্রাণ রক্ষা করে সাধুতার ধম্ম পালন করছেন। কেননা সাধুর ঐশ্বর্য শুধু পরহিত তরে। অতঃপর আবারো কিছুদূর উঠে পিঁপড়া তৃতীয় বারের মত জলে পড়ে গিয়ে হাবুডুবু খেতে লাগল। সাধু দু’বার পিঁপড়ার বিষাক্ত দাঁতের কামড় খাওয়ার পরও স্থির থাকতে পারেননি। তৃতীয়বারও জল হতে গাছে উঠানোর সময় হাতে কামড় দিয়েছিল।

কথাটা বলার তাৎপর্য এখানে ইহাই যে, বার বার কামড় খেয়েও সাধু পিঁপড়ার প্রাণ বাঁচাতে চেষ্টা করে সাধুর ধম্ম সাধু রক্ষা করে চলেছেন। এখানেই সাধুর সাধুত্বের পরিচয়, সাধুত্বের মহত্ব ও সাধুত্বের গুরুত্ব। আর পিঁপড়া তার উপকারী সাধুকে বার বার কামড় দিয়ে সে তার ধম্মকে রক্ষা করেছে। তিনি সাধু হোন বা অন্য কেহ, যে কেহ পিঁপড়াকে স্পর্শ করলে বা ধরলে সে কামড় দিবেই। উপকারী-অনুপকারী সে দেখবেনা, সাধু-অসাধুও সে বিবেচনা করবেনা। এখানেই তার পরিচয়। কামড় দেওয়া যেমন পিঁপড়ার ধম্ম, তেমনি রক্ষা করাও সাধুর ধম্ম। যে যার স্বভাব ধম্মই রক্ষা করেছে।

পৃথিবীতে যুগে যুগে শিল্প, শিক্ষা, সাহিত্য, কলা, ভাস্কর্য, সঙ্গীত, ইমারত প্রভৃতি স্থাপন করে সভ্য লোকেরা নানা সভ্যতার সৃষ্টি করেছে। পৃথিবীর দিকে দিকে অনেক শিল্প-সংস্কৃতি, কলা-ভাষ্কর্য ও সভ্যতার কালে কালে জন্ম দিয়ে মানুষ কালের সাক্ষী হয়ে রয়েছে। সভ্য লোকের কাছে তাঁরা আজ অমর হয়ে রয়েছে। আমরা প্রাচীন ব্যবিলনীয় সভ্যতার কথা জানি, মিশরীয় সভ্যতার কথা জানি, সিন্ধু সভ্যতার কথা জানি, রাখীগড়ি সভ্যতার কথা জানি। প্রাচীন অখণ্ড ভারতবর্ষে গান্ধার অঞ্চলে এবং মথুরায় গড়ে উঠা বিশ্ব খ্যাত বৌদ্ধ শিল্প ও কলা-ভাস্কর্য শিল্প-কলার কথাও জানি। বৌদ্ধদের দ্বারা তক্ষশীলা, নালন্দা, বিক্রমশীলা, ওদন্তপুরী, জগদ্দল, তেল্হারা, অমরাবতী, আলেক্সান্দ্রিয়া, বল্লভী, সোমপুর ও পণ্ডিত বিহারের মত অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বৌদ্ধেরা জন্ম দিয়ে বিশ্বে শিক্ষা-সভ্যতা ও জ্ঞানের সীমাহীন প্রসার করেছিল। এভাবে সভ্যতা সৃষ্টি করা হল সভ্য লোকের কাজ বা ধম্ম। কাজই সভ্য-অসভ্য লোকের পরিচয়। নতুন নতুন সৃষ্টিতেই সভ্য লোকেরা আনন্দ লাভ করে থাকেন। আর অসভ্যেরা আনন্দে উল্লাস করে সেগুলি ধ্বংসের মাধ্যমে।

অপরদিকে পৃথিবীতে যুগে যুগে একদল অসভ্য, মুর্খ ও বর্বর লোক সক্রিয় রয়েছে সভ্যতাতে ধ্বংস করতে, স্থাপত্যকে ধ্বংস করতে, কলা-ভাস্কর্যকে ধ্বংস করতে, শিল্প-সাহিত্যকে ধ্বংস করতে এবং সংগীত-সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে ধ্বংস করতে। এদের জন্মও হয়েছে সভ্যতাকে বিনষ্ট করার জন্য। এরা মানুষের বহুমুখী বিকাশ চায়না। এরা কেবল ভাঙতে জানে গড়তে জানেনা। যারা সভ্যতাকে ধ্বংস করে, ভাস্কর্যকে ধ্বংস করে, স্থাপত্যকে ধ্বংস করে, কলা-সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে ধ্বংস করে তারা হল মানবতার শত্রু, শয়তানের সরদার এবং মহামুর্খ। তারা যদি ভাঙ্গাভাঙ্গির সংস্কৃতিতে লিপ্ত না হত, ধ্বংসের সংস্কৃতিতে লিপ্ত না হত, জ্বালিয়ে নষ্ট করার সংস্কৃতিতে লিপ্ত না হত, তাহলে তারা যে মহাশয়তান, মহামুর্খ ও মহাঅসভ্য, মহাবর্বর মানুষ তা কিভাবে পরিচয় পেত? তাদের কর্মের দ্বারাই তাদেরকে মুর্খতার এবং অসভ্যতার পরিচয় দিতে হবে।

এরকম অসভ্যতা, বর্বরতা ও মুর্খতার পরিচয় দিতে গিয়ে তারা বিশ্বের সভ্য কত সভ্যতাকে যে বিলীন করেছে, ধূলায় মিশিয়ে দিয়েছে এবং নিশ্চিহ্ন করেছে তার ইয়ত্তা নাই। তজ্জন্য তারা সভ্য জাতির কাছে অহরহ লাঞ্ছিত হচ্ছে, অবহেলিত হচ্ছে, অপমানিত হচ্ছে, ঘৃণিত হচ্ছে, নিগৃহীত হচ্ছে এবং নিজেরাই নিজেদের মধ্যে লড়াই, ঝগড়া, রেষারেষি করে করে কত যে খুনাখুনি হয়ে মারা যাচ্ছে তার ইয়ত্তা নাই।

লোহা হতে উৎপন্ন ময়লা যেমন লোহাকে ধ্বংস করে তেমনি মুর্খ হতে উৎপন্ন হিংসা-বিদ্বেষ এবং ক্রোধও তাদেরকে নিরন্তর ধ্বংস করে থাকে। মুর্খেরা কোথাও শান্তিতে থাকতে পারে, সদ্ভাব-সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বভাব রক্ষা করে থাকতে পারেনা। সর্বত্র তাদের কর্মের মাধ্যমে নিজেদের মুর্খতাকে প্রকট করতেই হয়। ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় মুর্খতার, বর্বরতার ও অসভ্যতার রূপও ভিন্ন ভিন্ন দেখা যায়। যে রূপেই হোকনা কেনো ভাঙ্গাই হল তাদের ধর্ম, ধ্বংস করাই হল তাদের ধর্ম। তা না করলে তারা যে অসভ্য, বর্বর এবং মুর্খ তা অন্যেরা জানবে কিভাবে।

অপরদিকে ভাঙ্গার পরেও, ধ্বংসের পরেও সভ্য লোকেরা গড়তেই থাকেন। সৃষ্টি করতেই থাকেন। সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমেই তাঁরা সভ্য ও রুচিশীলতার পরিচয় দিয়ে থাকেন। সভ্যতার মূল্য, শিল্প সংস্কৃতির মূল্য, কলা-ভাস্কর্যের মূল্য, ইতিহাস-স্থাপত্যের মূল্য মুর্খেরা কখনও বুঝেনা। মুর্খদের কাছে, অসভ্যদের কাছে সেগুলির কোনো গুরুত্ব নাই। গরুকে যেমন একটা গোলাপ দিলে সে তা কামড়ে খেয়ে ফেলবে। একজন অবোধ শিশুকেও গোলাপ দিলে সে তা হাতে কসলিয়ে ছিড়ে ফেলবে। কারণ অজ্ঞতা ও মুর্খতার কারণে গরু ও শিশু গোলাপের মূল্য বুঝেনা। অনুরূপভাবে অসভ্য, বর্বর ও মুর্খের কাছেও কলা-ভাস্কর্য, শিল্প-সংস্কৃতি এবং ইতিহাস-সাহিত্য বা স্থাপত্যের মূল্যও সেরকম। তা যতই উৎকর্ষপূর্ণ হোকনা কেনো, ঐতিহাসিক হোকনা কেনো, মূল্যবান ও সৌন্দর্য মণ্ডিত হোকনা কেনো তারা সেগুলি ভাঙবেই, ধ্বংস করবেই, জ্বালাবেই। না হয় মুর্খতা, বর্বরতা ও অসভ্যতা প্রমাণ দেবে কি করে? তারা যে শয়তানের অনুসারী তার পরিচয় দেবে কি করে?

কেবল এক প্রকার ফুলের বাগানের চেয়েও বিভিন্ন প্রকার ফুলের সমাহারেই একটি সুন্দর দৃষ্টিনন্দন বাগান হয়, তেমনি বিভিন্ন শিল্প-সংস্কৃতি, কলা-ভাস্কর্য, সঙ্গীত-স্থাপত্য, ইতিহাস-সাহিত্য প্রভৃতির সমন্বয়েই এক সুন্দর ও পূর্ণাঙ্গ সভ্যতা গড়ে উঠে। মুর্খ ও অসভ্যদেরকে এগুলি বুঝাবে কে? তাদেরকে বুঝানো মানে হল পিঁপড়াকে প্রাণ বাঁচাতে যাওয়ার মত।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর দেখুন...
© All rights reserved © 2024 nagoriknewsbd
Theme Customized By BreakingNews