ইসকনকে কোটি টাকার তহবিল, রাজনৈতিক আশীর্বাদে বেপরোয়া পলাশ দাশ
চট্টগ্রাম জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ডিপিএইচই) নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ চন্দ্র দাশের বিরুদ্ধে নতুন করে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
ইসকনকে কোটি টাকার তহবিল দেওয়া, রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে পদে বহাল থাকা এবং অসংখ্য অনিয়মে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ওবায়দুল কাদেরের সুপারিশে নিয়োগপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তা এখনো স্বপদে বহাল থেকে বেপরোয়া আচরণ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
চট্টগ্রাম ডিপিএইচই-এর সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার ১৬টি দরপত্রে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
‘ডাবল ভেসেল আয়রন রিমুভাল সরবরাহ ও সংযোজন’ কাজের সবগুলো টেন্ডার ‘মেসার্স শামীম ট্রেডার্স’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান একচেটিয়াভাবে পেয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ঠিকাদারদের অভিযোগ—ডিপিএইচই কর্মকর্তারা যোগসাজশ করে নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে আগেভাগে ‘রেট কোড’ সরবরাহ করেন, ফলে অন্য কেউ অংশ নিতে পারেনি।
নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ দাশও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যে একজন ঠিকাদারকেই কাজ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ চন্দ্র দাশ, প্রাক্কলনিক মারজান বেগম, হিসাব সহকারী খগেন্দ্র চন্দ্র নাথ, ক্যাশিয়ার শুভ নন্দী ও অফিস সহকারী এসএম ইকবাল—
এই পাঁচজন একটি সিন্ডিকেট গঠন করে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়মে জড়িত রয়েছেন।
রুম্মান শিকদার নামের এক ঠিকাদার স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
দরপত্র আহ্বানের সময় শর্তে উল্লেখ করা হয়—“গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।”
ফলে বেশিরভাগ স্থানীয় ঠিকাদার অংশ নিতে পারেননি।
এটিই ছিল নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে সুবিধা দেওয়ার কৌশল বলে অভিযোগকারীরা জানান।
নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ দাশ দাবি করেছেন, “ই-জিপির মাধ্যমে সরকারি বিধান মেনেই টেন্ডার দেওয়া হয়েছে।
আমার কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নেই এবং কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কও নেই।”
প্রাক্কলনিক মারজান বেগম বলেন, “অফিসে বিভিন্ন সিন্ডিকেট কাজ করছে, সব কিছুই নির্বাহী প্রকৌশলী ডিল করেন। আমরা ছোট পোস্টে আছি, সব জানি না।”
ক্যাশিয়ার শুভ নন্দী ও হিসাব সহকারী খগেন্দ্র চন্দ্র নাথও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন, জানিয়ে যে টেন্ডার কমিটিতে তারা থাকেন না।
অভিযোগে আরও উল্লেখ আছে, নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ চন্দ্র দাশ সরকারি কর্মকর্তা হয়েও ‘মেসার্স আরণ্যক’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন।
২০২২ সালে ওবায়দুল কাদেরের সুপারিশে চট্টগ্রাম প্রকৌশল অধিদপ্তরে যোগদানের পর থেকেই তার প্রতিষ্ঠান একচেটিয়া কাজ পেতে থাকে বলে অভিযোগ।
Leave a Reply