পাঁচই অগাস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে দলটিকে নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গ ঘুরে ফিরে এলেও বিষয়টি নিয়ে এখন রাজনৈতিক মতবিরোধের পাশাপাশি কূটনৈতিক চাপের কথাও শোনা যাচ্ছে।
সোমবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, গণতন্ত্রের কথা বলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করতে বিভিন্ন দেশের দূতাবাস থেকে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছে।
“আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা যখন সরকারের পক্ষ থেকে আমরা বলি, রাজনৈতিক দলগুলোর অনেকেই তখন তাদের বক্তৃতায়, কথায় সেটার বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে,” যোগ করেন মি. মাহমুদ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এর আগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে বিএনপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখিয়েছিল। এখন একজন উপদেষ্টা বলছেন কূটনৈতিক চাপের কথা।
এর একদিন আগে ঢাকা সফরে আসা যুক্তরাজ্যের আন্ডার সেক্রেটারি (উপমন্ত্রী) ক্যাথেরিন ওয়েস্ট বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন।
রাজনীতিতে আওয়ামী লীগও সমান সুযোগ পাবে, সরকারের দিক থেকে তেমন উদ্যোগ প্রত্যাশা করেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মিজ ওয়েস্ট বলেন, “অবশ্যই এবং আমরা আশা করি অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের গণতন্ত্র কীভাবে এগিয়ে যাবে তার একটি রূপরেখা তুলে ধরবেন।”
সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে ‘হামলা’ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করার অধিকারকে সমর্থন করে তার দেশ।
এদিকে, ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দুকে দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চাননি তারা।
তিনি বলেন, বিএনপি চায় সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক।
বিএনপি যেহেতু বাংলাদেশের একটি প্রধান রাজনৈতিক দল, তাই তাদের মতামতকে অগ্রাহ্য না করার কথাও জানান অধ্যাপক ইউনূস।
কিন্তু, দমন-পীড়ন ও হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি দলটিকেও বিচারের মুখোমুখি করতে আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে।
এ অবস্থায় এসব রাজনৈতিক ‘চাওয়া’ ও কূটনৈতিক ‘চেষ্টা’ সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ভবিষ্যতের জন্য কী অর্থ বহন করছে?
Leave a Reply