দরপত্র কারসাজি, অর্থ আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি
নাগরিক নিউজ ডেস্ক :
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস.এম. মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থ আত্মসাৎ, মানিলন্ডারিং ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সহকারী পরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত–৫) মো. নওশাদ আলী এবং উপ-সহকারী পরিচালক মো. ইমরান আজানকে এই অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দুদক ইতোমধ্যে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। নির্বাচন কমিশন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষসহ একাধিক সংস্থার কাছ থেকে বিস্তারিত নথিপত্র চাওয়া হয়েছে।
দুদক কর্ণফুলী নদীর ড্রেজিং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অনুমোদনপত্র, আর্থিক বরাদ্দপত্র, টেন্ডার ডকুমেন্ট, দরপত্র বিজ্ঞপ্তি, দরপত্র উন্মুক্ত ও মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন, কার্যাদেশ, চুক্তিপত্র, বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন, বিল-ভাউচারসহ সংশ্লিষ্ট সব রেকর্ড চেয়েছে। এছাড়া এস.এম. মনিরুজ্জামান, তার স্ত্রী আইরিন জামান এবং দুই ছেলে মুহতাসিম ইয়াসার ও সারান ইয়াসারের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট ও জন্মনিবন্ধনের সত্যায়িত কপিও জমা দিতে বলা হয়েছে। এসব নথি আগামী ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে দুদকে পৌঁছাতে হবে। দুদকের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, অভিযোগের সুষ্ঠু ও গভীর তদন্তের স্বার্থে এসব কাগজপত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) দপ্তরের ২০২৩–২৪ অর্থবছরের চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অডিট প্রতিবেদনে প্রায় ১ হাজার ৩১৪ কোটি টাকার ৭২টি বড় ধরনের অনিয়ম চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে দরপত্র কারসাজি ও চুক্তি ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের মাধ্যমে প্রায় ২৬৫ কোটি টাকার ৪৪টি অনিয়মের কথা উল্লেখ করা হয়। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল কারাগারে যাওয়ার পর গত বছরের ১১ আগস্ট দায়িত্ব গ্রহণ করেন রিয়ার অ্যাডমিরাল এস.এম. মনিরুজ্জামান। এর আগে তিনি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ডিইডব্লিউ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সেনা কল্যাণ সংস্থার ডিজিএম (আইএস) ও কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের চিফ স্টাফ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে বন্দর সংশ্লিষ্ট মহলে ও সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ও আলোচনা দেখা দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দরে এমন অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। তারা মনে করেন, অভিযোগের সত্যতা উদঘাটনে দুদকের দ্রুত, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।
Leave a Reply