চট্টগ্রাম: রাতের আঁধারে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। শুরুতে উপরের ষষ্ঠ ও সপ্তম তলায় আগুন থাকলেও ক্রমে তা নিচের ফ্লোরগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে।
ইপিজেডের কারখানার আগুন ছড়িয়েছে পুরো ভবনে
এখন পুরো ভবনই অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হয়েছে। সেই আগুনের এত তেজ ১০০ মিটার দূরত্বেও ত্বক পুড়ে যাওয়ার দশা।
তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফায়ার ফাইটাররা কাজ করছেন আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখতে। যাতে আশপাশের কোনো ভবনে ছড়িয়ে না পড়ে সর্বনাশা এ আগুন।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বেলা ২টার দিকে অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড ও জিহং মেডিকেল কোম্পানির গুদামে আগুন লাগলেও রাত ১০টায়ও তা নেভানো দূরে থাক নিয়ন্ত্রণেও আনা যায়নি। তারপরও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর অন্তত ২৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
আগুন নেভাতে ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক রোবটও।
সরেজমিন দেখা গেছে, জ্বলতে জ্বলতে ভবনটির টপ ফ্লোরের ছাদ ধসে পড়েছে। বিভিন্ন ফ্লোরের শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, দরজা, জানালা, দেয়াল নিচের দিকে পড়ছে। থেমে থেমে বিকট শব্দ হচ্ছে। রাত ১০টার দিকে গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। যা দেখে উপস্থিত সবার মধ্যে কিছুটা স্বস্তি নেমে আসে। উদ্ধার কাজে সহায়তা করছে বর্ডার গার্ডের দুই প্লাটুন সদস্য
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্মরণকালে চট্টগ্রামে এত ভয়াবহ আগুন দেখা যায়নি। এখন মনে হচ্ছে- পুরো ভবন জ্বলেপুড়ে ছাই হওয়ার অপেক্ষায় সবাই। এর থেকে শিক্ষা নিয়ে একদিকে কারখানাগুলো ঢেলে সাজাতে হবে অন্যদিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে উন্নততর ফায়ার ফাইটিং ইক্যুইপন্টে সমৃদ্ধ করতে হবে। বিশেষ করে শিল্পাঞ্চলগুলোতে স্পেশাল ফায়ার সার্ভিস সেবা দিতে হবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একজন কর্মকর্তা নাগরিক নিউজকে বলেন, ফায়ার সার্ভিস সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছ। আগুন নেভানোর পাশাপাশি আমাদের চেষ্টা হচ্ছে আগুন যাতে আশপাশের ভবনে ছড়িয়ে পড়তে না দেওয়া। একই সঙ্গে ভবনের উপরের ফ্লোর থেকে ভেঙে পড়া দেয়াল, ছাদ, দরজা-জানলায় যাতে নিচের কেউ আহত না হন। আশার কথা হচ্ছে, ভবন থেকে কর্মীদের নিরাপদে বের করে আনা সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকার বহুতল পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর সঙ্গে সমন্বিতভাবে অগ্নিনির্বাপণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নৌবাহিনীর সদস্যরাও।
সিইপিজেড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় আগুন লাগা ভবনের আশপাশের কারখানাগুলো এখন বন্ধ রাখা হয়েছে।
Leave a Reply