১ম পর্ব
৮০% পদোন্নতি প্রভাবশালীদের ঘনিষ্ঠজনদের
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডে (ইউসিবিএল) সম্প্রতি প্রমোশন নিয়ে গুরুতর অনিয়ম ও বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, পদোন্নতি প্রাপ্তদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশই বর্তমান বোর্ডের চেয়ারম্যান, এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান এবং স্বাধীন পরিচালক (ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডাইরেক্টর) দের ঘনিষ্ঠজন। আল হাসান খান নিজেও এফভিপি হিসেবে পদোন্নতি বাগিয়ে নিয়েছেন।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, অনেকের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে এই প্রমোশন দেওয়া হয়েছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ও কদমতলী ব্রাঞ্চের ম্যানেজার আল হাসান খান এবং চট্টগ্রামের আইটি ডিভিশনে কর্মরত আব্দুর রহিম মিলে এই প্রমোশন বাণিজ্যে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।
অভিযোগকারীদের দাবি, যেসব কর্মকর্তা যোগ্যতা, মেধা এবং পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে প্রমোশনের জন্য যোগ্য ছিলেন, তাদের অধিকাংশই উপেক্ষিত হয়েছেন। ব্যাংকের ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে যাঁরা মূল ভূমিকা রেখেছেন, বিশেষ করে যারা ব্যাপক ডিপোজিট সংগ্রহ করেছেন, তারাও প্রমোশন পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক যদি বিষয়টি তদন্ত করে, তাহলে এই প্রমোশন বাণিজ্যের পেছনের রহস্যময় চরিত্রগুলো বেরিয়ে আসবে।” তিনি আরও বলেন, “ব্যাংকের টিকে থাকা ও অগ্রগতির জন্য এখন সবচেয়ে জরুরি স্বচ্ছতা। বাংলাদেশ ব্যাংক যদি এখনই ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ভবিষ্যতে আবারো দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির রাজত্ব শুরু হবে।”
এ বিষয়ে ইউসিবিএল কর্তৃপক্ষ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য না করলেও, ব্যাংকিং মহলে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
যার বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর সে আল হাসান খান গণমাধ্যমকে বলেন , আমার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ মিথ্যা। কাউকে প্রমোশন দেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই এইটা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার।
কে এই আল হাসান খান?
আল হাসান খান নিষিদ্ধ নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের কর্মীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ আছে।
গত ১৭ বছর ধরে তিনি ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে পরিচিত রাউজানের এমপি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর অনুসারী হয়ে এলাকায় রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন । অভিযোগ রয়েছে, তার নেতৃত্বে রাউজানে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ওপর একাধিকবার হামলা হয়েছে।
যদিও তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে, তবুও তিনি এখনো বহাল তবিয়তে ব্যাংকে চাকরিতে বহাল রয়েছেন, যা প্রশ্ন তুলছে প্রশাসনিক জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়া নিয়ে।
প্রিয় পাঠক— আল আহসান খানের ব্যাংকিং সেক্টরে গুরুতর অনিয়ম, পদোন্নতি এবং পদোন্নতি বাণিজ্যের বিস্তারিত দ্বিতীয় পর্বে দেখুন।
Leave a Reply