নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রকম অনিয়ম,দুর্নীতি এবং স্বেচ্ছাসারিতা ছাড়াও আপন সহোদর ৯ বোনের সম্পত্তি আত্মসাতের মত গুরুতর অভিযোগ উঠেছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আলমগীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় প্রকৌশলী মো. আলমগীর চৌধুরী এক রকম ঠক প্রতারক যে সরকার ক্ষমতায় আসে সে সরকারের পৃষ্টপোষকতায় মাতোয়ারা হয়ে থাকেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) অনেক ছাত্র / শিক্ষক জানান,এই আলমগীর চৌধুরী আওয়ামীলীগের স্বেচ্ছাসারিতা সরকারের পত্যক্ষ এবং পরোক্ষ মদদদাতা হিসেবে বিভিন্ন সময়ে ৫আগস্ট আগে পর্যন্ত ছাত্রদের উপর হামলার উস্কানিদাতা ।
এলাকাবাসী আপন বোনদের সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম শহরের রাঙ্গুনিয়ার চৌধুরী বাড়ির মৃত ছয়েদুল আলম চৌধুরীর পুত্র আলামগীর চৌধুরী তার ৯ বোনের ওয়ারিশ হিসেবে প্রাপ্ত সম্পত্তি ও দলিলের সম্পত্তি জাল জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের হস্তগত ও আত্মসাত করে নেন। এছাড়া বোনের ও মায়ের সম্পত্তি ও নিজের সুবিধার্থে পারিবারিক কবরস্থান,পুকুর ও চলাচলের রাস্তা দাবি করে আত্মসাত করেন বলে ও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা । এ নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ ও মামলা হামলার ঘটনা ঘটেছে।
রাঙ্গুনিয়া পোমরা এলাকার অভিযুক্ত আলমগীর চৌধুরী নিজেকে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে এক সময় স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগ নেতার আশ্রয় প্রশ্রয়ে তিনি ধরাকে সরা জ্ঞান করে বোনদের সম্পত্তি আত্মসাৎ করে যাচ্ছে।স্থানীয় এলাকাবাসী ও বিভিন্ন নথিপত্র সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম শহরের রাঙ্গুনিয়ার চৌধুরী বাড়ির মৃত ছয়েদুল আলম চৌধুরীর পুত্র আলামগীর
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায় ,রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আলমগীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে ছুটি ছাড়াই বাড়িতে বসে দিন কাটানোর অভিযোগ উঠেছে। সরকার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর, ট্রেজারারসহ ৪০ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। তাদের পদত্যাগে বিশ্ববিদ্যালয় অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে একমাত্র দায়িত্বে বহাল থাকা রেজিস্ট্রার আলমগীর চৌধুরী নিজের ইচ্ছামতো ছুটি কাটাচ্ছেন। বিষয়টা যেন ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যাব না, পদত্যাগও করব না’— এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, প্রথমবার নিয়োগের পর থেকে অনিয়মিত অফিস করতেন আলমগীর চৌধুরী। তবে গত ফেব্রুয়ারিতে শেষবার নিয়োগ পাওয়ার পর অনিয়মিত তো বটেই, বেশিরভাগ দিন ছুটি কাটিয়েছেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য ও একমাত্র আবাসিক কর্মকর্তা হিসেবে রেজিস্ট্রারের অনুপস্থিতিতে স্বাভাবিক কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের শীর্ষ পদে কেউ না থাকায় অনিরাপদ বলেও মনে করেন শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে রেজিস্ট্রার চলে যাওয়ায় প্রশাসনের মধ্যে চলছে সমালোচনা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি তৃতীয়বারের মতো চুক্তিভিত্তিক পুনঃনিয়োগ দেওয়া হয় রেজিস্ট্রারকে। সর্বশেষ নিয়োগ পাওয়ার পর ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ৮৬ দিনের মধ্যে ৫৩ দিনই ছুটি কাটিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার আলমগীর চৌধুরী। অথচ প্রতি মাসে লাখ টাকা বেতন নিচ্ছেন তিনি। মাঝে ২০ দিন বিরতি দিয়ে আবার টানা ৪০ দিনের ছুটি কাটাতে দেশের বাইরে যান। পরে ৭ আগস্ট অসুস্থতার কথা বলে ছুটিতে তার নিজ বাড়ি চট্রগ্রামে চলে যান। কতদিনে অফিসে যোগদান করতে পারবেন তা উল্লেখ করেননি।
চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘সুস্থ হয়ে কর্মস্থলে যোগদানের আশা রাখি।’ কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন শুনে ৯ আগস্ট রাতে ক্যাম্পাসে তড়িঘড়ি করে চলে আসেন। এরপর আবার ২ সেপ্টেম্বর কাউকে না জানিয়ে ছুটিতে চলে গেছেন বলে প্রশাসনিক ভবন থেকে জানা গেছে।
সূত্রের তথ্য, রেজিস্ট্রার বছরের পর বছর অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউজের একটি রুম দখল করে আছেন। এমনকি উপাচার্যের নামে বরাদ্দকৃত একটি গাড়িও সার্বক্ষণিক ব্যবহার করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গাড়ি চলাচল বন্ধ করলেও তিনি সার্বক্ষণিক ব্যবহার করেছেন বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।
এক কর্মকর্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কিছু বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। যেহেতু কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীর বাস চলছে না, তাই গাড়ি চললে শিক্ষার্থীরা সমালোচনা করছেন। তিনি রেজিস্ট্রারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ব্যবহার করতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি গ্রাহ্য করেননি।
এর আগে চুক্তির শর্ত ভেঙে গত বছর অবৈধভাবে প্রায় দেড় লাখ টাকা ঈদ বোনাস নিয়েছিলেন প্রকৌশলী আলমগীর চৌধুরী। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে ইউজিসির নির্দেশনায় ওই অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য হন তিনি।
এ দিকে বোনদের অভিযোগ ,আমার বাবার নিজ নামে খরিদা সম্পত্তির দলিল থাকা সত্বেও ওই সম্পত্তি জাল জালিয়াতের মাধ্যমে নতুন দলিল ও বিএস খতিয়ান সৃষ্টি করে সে নিজের ক্রয়কৃত বলে দাবী করছে আসলে সে একজন ফ্রট। সে সরকারী চাকরী করার সুবাদে অত্যান্ত চালাক প্রকৃতির একজন মানুষে পরিণত হয়েছে। আমরা মেয়েরা সহজ সরল মানুষ, কাগজপত্রের কোন জটিলতা বুঝতে না পারায় আমাদেরকে ঘুমে রেখে নিজের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে। এতে করে আমারা বোনেরা সম্পত্তির ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এ ছাড়া ও একের পর এক ভূমি আত্মসাৎ ও দখল ছাড়াও তার বহু অপকর্ম সমাজে কথিত রয়েছে। তার জাল জালিয়াতির কবল থেকে রক্ষা পেতে আমরা আইনি সহযোগিতা ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে কঠিন শাস্তির দাবী জানাই।
স্থানীয়দের সূত্রের মতে জানা যায়, অভিযুক্ত আলমগীর চৌধুরীর ঘটনাটি অলৌকিক ঘটনার মত আলমগীর চৌধুরী চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানা পোমরা ইউনিয়নের মৃত ছায়েদুল আলম চৌধুরীর প্রথম সন্তান, জন্ম ১৯৫২ সালে। তাহার পিতা ছায়েদুল আলম চৌধুরীর তৎকালীন ব্রিটিশ অফিসার ছিলেন। দেশ স্বাধীনতার পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সরকার তাহাকে এসডিও অফিসার হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে। আলমগীর চৌধুরী পিতা ১৯৮২ সালে মারা যান। মৃত্যুর আগে পাকিস্তান সরকার থেকে বিভিন্ন সময় বেশ কিছু জমি জমা নিলাম /বন্দোবস্তি নেন। এর মধ্যে ১৯৫০/৫১ সালে পূর্ব পাকিস্তান সরকার হইতে বন্দোবস্তির/নিলাম নেওয়া সম্পত্তি R/S, P/S আলমগীর চৌধুরী তার নামে কাগজপত্র সৃষ্টি করে। এদিকে আলমগীর চৌধুরীর জাতীয় পরিচয় পত্রে দেখা যায় তাহার জন্ম ১৯৫২ সালে অন্যদিকে অভিযুক্ত আলমগীর চৌধুরী জমির মালিকানায় দেখা যায় প্রায় সময়কাল ১৯৫০/৫১ সাল, স্থানীয় অনেক মুরুব্বিদের মতে জন্মের আগে জমিজমা ক্রয় বা নিজের নামে সৃষ্টি করা এটাও এক ধরনের অলৌকিক ঘটনা বা ব্যতিক্রমী ঘটনা ছাড়া আর কিছুই নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এবং আলমগীর চৌধুরীর নিকট আত্মীয় অনেকেই জানান, আলমগীর চৌধুরী এবং বোনেরা দুই মায়ের হওয়ায় সৎ বোনদেরকে সম্পত্তি হতে বঞ্চিত করার কোন উদ্দেশ্যে নিজের মায়ের আপন দুই বোনকেও পৈত্রিক সম্পত্তি হতে বঞ্চিত করতে চাচ্ছেন তিনি।
বর্তমানে মামলাটি CID তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানান অভিযুক্ত আলমগীর চৌধুরীর বোন ও মামলার বাদীগণ।
এদিকে এ মামলার বাদী প্রতিবেদককে জানান, আলমগীর চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাক্তন প্রধান প্রকৌশলী ও বর্তমানে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ও প্রভাবশালী হওয়ায় CID প্রতিবেদনকারী কর্মকর্তা সহ মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করতেছে বলে অভিযোগ করেন। মামলার প্রতিবেদনকারী কর্মকর্তা একপর্যায়ে মামলার বাদিকে সম্পত্তির আদালতের রায় না হওয়ার আগেই বিএস ঠিক আছে এবং আর এস পিএস কিছুই না বলেন, যার কারনে মামলার বাদীর ভয় ও উদ্ভেগ সৃষ্টি এবং সঠিক রায়ের বেগ হবে বলে মন্তব্য করেন।
Leave a Reply