থানায় ধরে এনে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে দালালের সহযোগিতায় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে স্ট্যাম্পে সাক্ষর আদায়
নিজস্ব প্রতিবেদক :
কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার পালাকাটা এলাকার এক ব্যবসায়ীকে বিনা পরোয়ানায় থানায় নিয়ে মারধর করে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে খালি স্ট্যাম্পে সাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে থানার এএসআই গোলাম মোস্তফা ও পুলিশের সোর্স পরিচয় দেওয়া (দালাল) আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড পালাকাটা লালমিয়া সওদাগর পাড়া এলাকার আলী আহমদের পুত্র ব্যবসায়ী ছাবের আহামদ (৪৫) বাদী হয়ে চকরিয়া থানার এএসআই গোলাম মোস্তফা ও সোর্স মোঃ আরিফসহ তিনজনের নামে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ছাবের আহমদ গত ৪ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নিজ বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এ সময় চকরিয়া থানার এএসআই গোলাম মোস্তফা, একজন কনস্টেবল ও থানার সোর্স পরিচয় দেওয়া ঢাকা কেরানীগঞ্জ থানার রোহিতপুর গ্রামের আবদুল হালিমের ছেলে মো. আরিফসহ আরও ৬/৭ জন ব্যক্তি ছাবের এর ঘরে প্রবেশ করে কোনো কারণ ছাড়াই তাকে মারধর পূর্বক ফিল্মিস্টাইলে টানাহেঁচড়া করে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে থানার ৩য় তলার একটি কক্ষে আটক করে রাখে। সেখানে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ক্রসফায়ারের ভয়ভীতি দেখানো হয় এবং একশত টাকা মুল্যের তিনটি নন-জুডিশিয়াল খালি স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক সাক্ষর নেন এএসআই গোলাম মোস্তফা। এসময় তার কাছে থাকা ১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা কেঁড়ে নেওয়া হয়।
ছাবের আহামদ বলেন, থানা পুলিশের সোর্স পরিচয় দেওয়া মাদক মামলার আসামি আরিফ থানা পুলিশের জন্য কয়েক দফায় টাকা চেয়ে না পেয়ে, থানার এএসআই গোলাম মোস্তফাকে দিয়ে আমাকে হেনস্তা করে টাকা ও স্ট্যাম্প নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে যদি আমি কোথাও অভিযোগ করি তাহলে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে ফাঁসানো হবে বলেও হুমকি দেয় এএসআই গোলাম মোস্তফা।’
এএসআই গোলাম মোস্তফার কাছে জানতে চাইলে তিনি মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘একটা অভিযোগের প্রেক্ষিতে ছাবের আহমেদের বাড়িতে গেলে, তার ছেলে পুলিশকে উদ্যেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং লম্বা দা দিয়ে পুলিশকে তাড়া করে। এ ঘটনায় গালমন্দ করা হয়েছে মাত্র। থানার তিন তলায় উভয়পক্ষ বসেছিল, সেখানে আপোষ মিমাংসার জন্য যদি কেউ স্ট্যাম্প নেয়, সেই দায়ভারতো আমার হতে পারেনা।’
এ বিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগের বিষয়টি সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) মহোদয় তদন্ত করছেন, তাই তদন্তাধীন বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।