বাংলাদেশের তরুণেরাই গড়বে নতুন বাংলাদেশ। আমি তাদের সাফল্য কামনা করি। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ কথা বলেছেন।
মঙ্গলবার নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের প্রতিষ্ঠান ‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তরুণেরা সব সময় তরুণদের নিয়ে কথা বলতে চান। তরুণদেরই নেতৃত্ব দেওয়া উচিত। আমাদের মতো বুড়োদের নয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দেলনের সময় বিদেশে থাকা ড. ইউনূস বলেন, আমি বুঝতে পারছিলাম না, বাংলাদেশে কী ঘটছে। হঠাৎ বাংলাদেশের সব তরুণ একত্র হয়েছেন এবং বলছেন, যথেষ্ট হয়েছে। আমরা আর এসব (অন্যায়, বৈষম্য) সহ্য করব না। তাঁরা সহ্য করেননি, তারা বিগত সরকারের ছোড়া গুলির সামনে নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছেন।
তরুণেরা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমি কিছু ভিডিও দেখেছি। তারা সেখানে এমনভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন, বলছিলেন, আমাদের কতজনকে আপনারা হত্যা করতে পারবেন। আমরা এখানে আছি, আমাদের হত্যা করুন। তারা নতুন একটি বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছেন।
ড. ইউনূস বলেন, পরবর্তী বাংলাদেশ হবে তরুণদের বাংলাদেশ। তারা এই প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। আগের সরকার চলে যাওয়ার পর তারা আমাকে আমন্ত্রণ জানান। আমাকে দেশের নেতৃত্ব দিতে আমন্ত্রণ জানান। আমি সেটাই করার চেষ্টা করছি। তরুণেরা জাতিকে যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, সেটি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি।
তারা যেভাবে (আন্দোলন) করেছেন, তাতে পুরো জাতি এক হয়েছে। পুরো দেশের মানুষ এবার তরুণদের সমর্থন দিয়েছেন। তরুণদের আকাঙ্খা বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের সমর্থন পেয়ে আমি খুব খুশি। আমরা আরও এগিয়ে যেতে চাই। নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। তারা বলেছেন আমরা ‘রিসেট বাটন’ চেপেছি। সব পুরোনো শেষ হয়েছে। এখন আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ব।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, দেশ গড়তে, নিজেদের গড়তে যে শব্দে, যে ভাষায় তারা (আন্দোলনকারীরা) কথা বলেছেন, তা অসাধারণ। আমি আগে কখনও এভাবে কাউকে কথা বলতে শুনিনি। তারা তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ করতে প্রস্তুত। দয়া করে তাদের সাহায্য করুন, সমর্থন করুন। তাদের স্বপ্ন যেন সত্য হয়। আমরা একসঙ্গে এ দায়িত্ব নিতে পারি। এ স্বপ্ন পূরণে আপনি (ক্লিনটন) আমাদের সঙ্গে থাকবেন।
ছাত্র–জনতার আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,‘এ আন্দোলন খুব পরিকল্পিতভাবে চালিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিছুই এমনিতে হয়নি। এটি খুব গোছানো ছিল। এমনকি, লোকজন জানতেন না, কারা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
তাই, আপনি একজনকে ধরে ফেলে বলতে পারবেন না, ঠিক আছে আন্দোলন শেষ। তারা যেভাবে কথা বলেছেন, তা সারা বিশ্বের তরুণদের অনুপ্রেরণা জোগাবে। আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই।
Leave a Reply