অব্যাহত পতন থেকে বের হতে পারছে না পুঁজিবাজার। প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার মূলধন সপ্তাহের প্রথম ২ কার্যদিবসেই বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে । এ নিয়ে গত দুই মাসে বাজার ৪২ হাজার ৫২৬ কোটি ৭২ লাখ টাকার মূলধন হারিয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার এক দিনেই ডিএসই পাঁচ হাজার ২৪৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকার মূলধন হারিয়েছে। আগের দিন বাজার মূলধন কমেছিল পাঁচ হাজার ৪৮৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
টানা দর পতনে বিনিয়োগকারী ও মধ্যবর্তী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে উদ্বেগ, আতঙ্ক ও হতাশা বাড়ছে। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১০ সালের ধস ও পরবর্তী ১৪ বছরের নিম্নমুখী ধারায় পুঁজিবাজারের সব শ্রেণির বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত।
এমন অবস্থায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের অবসান ঘটলে বিনিয়োগকারীরা নতুন আশায় বুক বেঁধেছিলেন।
রবিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দরপতনে সূচক কমেছে ১৪৯ পয়েন্ট, যা ছিল গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
গতকাল সোমবার পতন হয়েছে আরো প্রায় ৬৭ পয়েন্ট। এ নিয়ে ১২ আগস্ট থেকে ডিএসইর সূচক লাপাত্তা হয়ে গেল ১১৪৭ পয়েন্ট।পতনের পর ডিএসইর প্রধান সূচক নেমে গেছে ৪৮৯৮ পয়েন্টে, যা গত প্রায় চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০২০ সালের ৩০ অক্টোবর ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ৪৮৬৬ পয়েন্ট। অর্থাৎ গত তিন বছর ১১ মাসের মধ্যে বর্তমানে শেয়ারবাজারের সূচক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে।
অব্যাহত দর পতনের প্রতিবাদে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরাতন ভবনের সামনে সংগঠনটির নেতারাসহ সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন।
বিক্ষোভকালে বিনিয়োগকারীরা বলেন, ‘২০১০ সালেও আমরা এতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, যা গত আড়াই মাসে হয়েছি। ২০১০ সালে শেয়ারের দাম কমেছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে শেয়ারের দাম ফেসভ্যালু ১০ টাকার নিচে নেমে এসেছে। এতে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।’
বিনিয়োগকারীরা আরো বলেন, ‘গত দুই মাসের টানা দরপতনের ফলে আমাদের বিনিয়োগকৃত অর্থের ৭০ শতাংশ কমে গেছে। আমরা সবাই নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি, আমরা এখানে ভিক্ষা করতে আসিনি। এখন পুঁজি হারিয়ে আমরা নিঃস্ব।
Leave a Reply