নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটিতে রাজীব জাফর চৌধুরীর অন্তর্ভুক্তিকে ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক ও দলীয় অস্বস্তি। ৬ মে ঘোষিত ৭৩ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রাজীবকে ২৯ নম্বর সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অথচ স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে তিনি পরিচিত ‘নৌকা চৌধুরী’ নামে।
রাজীবের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীরা। অভিযোগ উঠেছে, তিনি একজন আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান—তাঁর পিতা জাফর আহমদ চৌধুরী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা, এবং মা হাসিনা জাফর এখনো কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে সক্রিয় রয়েছেন।
তবে বিতর্ক এখানেই শেষ নয়। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ছবিতে দেখা যায়, রাজীব চৌধুরী সাতকানিয়া উপজেলায় আওয়ামী ঘরানার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। একটি ছবিতে দেখা যায়, তিনি দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ও কথিত ‘অবৈধ মেয়র’ জুবায়েরকে ফুল দিয়ে বরণ করছেন। তাঁর মাথার ওপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতিসহ ফুলের বিশাল ব্যানারও দৃশ্যমান।
বিগত সরকারের আমলে রাজীব চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মতলব ও কুতুব, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি সুমন দক্ষিণ জেলা প্রজন্মলীগের সভাপতি আবু ছালেহ,কালিয়াইশ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাস্টার মহিউদ্দিন,কালিয়াইশ ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিক মেম্বারের সাথে রাজিবকে বিভিন্ন আওয়ামীলীগের প্রোগ্রামে দেখা গেছে।
এই প্রেক্ষাপটে বিএনপির ভেতরে শুরু হয়েছে ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া। তৃণমূল নেতাকর্মীরা বলছেন, রাজীব চৌধুরীর অতীত রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা এবং বর্তমান অবস্থান দলের আদর্শের পরিপন্থী। অনেকের মতে, এটি এক ধরনের আদর্শহীন আপস এবং ত্যাগী নেতাদের প্রতি চরম অবমূল্যায়ন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি কিংবা কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ না খুললেও, অভ্যন্তরীণ পর্যবেক্ষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত দলীয় ঐক্য ও আস্থার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
Leave a Reply