নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বাংলাদেশ রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) পূর্বাঞ্চলের সাধারণ চেকপোস্টের চিফ ইন্সপেক্টর (সিআই) মোহাম্মদ আমান উল্লাহ আমান দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে কর্মরত রয়েছেন, তার বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ।
একাধিক সূত্র মতে, সিআই আমান মাদক নিয়ন্ত্রণ চক্র, টিকিট কালোবাজারি এবং অন্যান্য অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। জানা গেছে, এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড থেকে তিনি প্রতি মাসে প্রায় দুই লাখ টাকা আয় করেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, যা রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় অভিযোগ ওঠে যে, সিআই আমান অবৈধভাবে আরএনবি সদস্যদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করে বিনা অনুমতিতে ছুটি মঞ্জুর করেছেন। এ ধরনের অনিয়ম কেবল বাহিনীর কার্যক্রম ব্যাহত করেনি, বরং রেলওয়ের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এসব অভিযোগের পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও, তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
২০২১ সালের নভেম্বরে সিআই আমানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি অভিযোগপত্র রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (পূর্বাঞ্চল) প্রধান কমান্ড্যান্টের কাছে জমা দেওয়া হয়। অভিযোগে তার দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়। তবে আগের মতোই, এ ক্ষেত্রেও কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীতে বেশ কিছু পদায়ন ও রদবদল করা হলেও, সিআই আমান তার পদে বহাল রয়েছেন। এতে অধঃস্তন কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই তার বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন, কারণ তারা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থার শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন।
সিআই আমানের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তার বহাল থাকা রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। অনেকেই মনে করছেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার পেছনে বাহিনীর ভেতরে শক্তিশালী প্রভাবশালী মহলের হাত রয়েছে।
রেলওয়ের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট মহল এখন এ বিষয়ে নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করছেন। বাংলাদেশ রেলওয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রক্ষা এবং জনস্বার্থে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এখন দেখার বিষয়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সিআই আমানের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয় কি না, নাকি এ নিয়ে অসন্তোষ ও বিতর্ক আরও বাড়তে থাকে।
নাগরিক/আশরাফ/তাপস
Leave a Reply