মেঘনা নদীর চাঁদপুরের হাইমচর এলাকায় মালবাহী লাইটার জাহাজ এমভি-আল বাখেরার সাতজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। র্যাব জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পেছনে ছিল দীর্ঘদিনের বেতন না পাওয়া ও দুর্ব্যবহারের ক্ষোভ।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস জানান, আকাশ হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি প্রায় আট মাস ধরে এমভি-আল বাখেরা জাহাজে কাজ করছিলেন। তবে, সময়মতো বেতন না পাওয়া, ছুটি না দেওয়া এবং মাস্টার গোলাম কিবরিয়ার দুর্ব্যবহারের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুব্ধ ছিলেন।
র্যাব-১১ কুমিল্লার সিপিসি-২ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে উপ-অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন জানান, গত ২২ ডিসেম্বর রাতে আকাশ জাহাজের রাতের খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সবাইকে অচেতন করেন। রাত সাড়ে তিনটায় তিনি মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে হত্যা করেন এবং গ্রেপ্তার এড়াতে জাহাজে থাকা বাকিদেরও একইভাবে হত্যা করেন।
ঘটনার পর ভোরে জাহাজ চালিয়ে মাঝিরচর এলাকায় পৌঁছানোর পর, জাহাজটি চরে আটকা পড়লে আকাশ পাশের একটি ট্রলারে করে পালিয়ে যান।
র্যাব জানিয়েছে, অভিযুক্তের কাছ থেকে ঘুমের ওষুধের খালি পাতা, রক্তমাখা একটি নীল জিন্স, হ্যান্ড গ্লাভস, লোটো ব্যাগ এবং নিহতদের ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২৩ ডিসেম্বর চাঁদপুরের হাইমচর এলাকায় জাহাজ থেকে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ। হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও দুইজন মারা যান। নিহতরা হলেন মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, গ্রিজার সজিবুল ইসলাম, লস্কর মাজেদুল ইসলাম, শেখ সবুজ, আমিনুর মুন্সী, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন ও বাবুর্চি রানা কাজী। এছাড়া সুকানি জুয়েল বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
Leave a Reply