৬০ কোটি টাকায় ১৯৮৭ সালে ডেনমার্ক থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) মালিকানাধীন ‘বাংলার জ্যোতি’ ও ‘বাংলার সৌরভ’। জাহাজ দুটি থেকে ৩৭ বছরে বিএসসির আয় হয়েছে ১ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা। গত বছর অগ্নিকাণ্ডে পৃথক দুটি ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জাহাজ দুটি নিলামে তোলা হয়।
জাহাজ দুটির সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েও নির্ধারিত সময়ে অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় মেসার্স মাষ্টার এন্ড ব্রাদার্সের আর্নেস্টমানি বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হয়। পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা জিরি সুবেদার শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের কাছে বিক্রি করা হয় জাহাজ দুটি। তারা ভ্যাট-করসহ জাহাজ দুটির দাম পরিশোধ করেছে ৪৫ কোটি ৮৬ লাখ ৬১ হাজার টাকা।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকেলে চট্টগ্রামে বিএসসির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মাহমুদুল মালেক এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুল মালেক বলেন, ‘বাংলার জ্যোতি ও বাংলার সৌরভ ১৯৮৭ সালে ডেনমার্ক থেকে ৬০ কোটি টাকায় কেনা হয়েছিল। জাহাজ দুটি এ পর্যন্ত ৪২৫ লাখ টন কার্গো পরিবহন করে। জ্যোতি আয় করেছে ৮০৫ কোটি টাকা। সৌরভ আয় করেছে ৭৩১ কোটি টাকা। এ ধরনের জাহাজ ২৫-২৬ বছরের বেশি সময় চালানো যায় না।’
তিনি আরো বলেন, ‘জাহাজদুটি আর ব্যবহারের সুযোগ নেই। স্ক্র্যাপ হিসেবেই জাহাজ দুটিকে অবসায়ন করা হবে।’
জানা গেছে, জি টু জি ভিত্তিতে ১৯৮৭ সালে এম.টি.বাংলার জ্যোতি এবং এম.টি.বাংলা সৌরভ জাহাজদুটি ৬০ কোটি টাকায় (প্রতিটি ৩০ কোটি টাকা মূল্যে) কেনে বিএসসি। জাহাজ দুটির ডেডওয়েট টনেজ (ডিডব্লিউটি) ১৪ হাজার ৫৪১ মেট্রিক টন। ২০২৪ সালে অব্যহতি প্রদানের আগ পর্যন্ত জাহাজ ২টি এ পযর্ন্ত প্রায় ৪২৫ লক্ষ মেট্রিক টন কার্গো পরিবহন করেছে।
এই পযর্ন্ত এম. টি. বাংলার জ্যোতি বিপরীতে বিএসসি প্রায় ৩২২ কোটি টাকা এবং বাংলার সৌরভ জাহাজের বিপরীতে প্রায় ২৮৫ কোটি টাকা আয় করেছে।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় ‘বাংলার জ্যোতি’ তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণ থেকে আগুন লাগে। ইস্টার্ন রিফাইনারির ডলফিন জেটিতে জাহাজটিতে আগুন লাগে। ঘটনাস্থল থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ৫ অক্টোবর বাংলার সৌরভে আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডে চারজন মারা যান। জাহাজ দুটির নিলামের জন্য ৫ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করের বিএসসি। ৭ জানুয়ারি দরপত্র খোলা হয়। ১৬টি দরপত্র পাওয়া যায়।
প্রথম সর্বোচ্চ দরদাতা মাস্টার অ্যান্ড ব্রাদার্স দর দিয়েছিল ৪০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা ৩৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা দর দিয়েছিল। করসহ তারা দিচ্ছে ৪৫ কোটি ৮৬ লাখ ৬১ হাজার টাকা। সংরক্ষিত মূল্য ছিল ৩৬ কোটি ১০ লাখ টাকা। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি চুক্তি হয়। ৫ মার্চ দুটি জাহাজের দায়িত্বভার নিয়ে জাহাজ দুটি বিচিং করেছে।
Leave a Reply